ঢাকা, রবিবার - ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আজ গাজীপুর যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

ছবিঃ সংগৃহীত

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আজ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) সুবর্ণজয়ন্তী। প্রতিষ্ঠানটির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১১১টিরও বেশি আধুনিক ধানের জাত উন্নয়নসহ বিগত বছরের উদ্ভাবনের সাফল্যগুলো তুলে ধরা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব উদ্ভাবনগুলো তুলে ধরবেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গণসংযোগ কর্মকর্তা রাশেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে ব্রি’তে ‘বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র’ উদ্বোধন করবেন।

ব্রি’র ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে ধান গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের প্রধান কেন্দ্র ও পথিকৃৎ হিসেবে দেশে-বিদেশে সুপরিচিত প্রতিষ্ঠানটি ১৯৭০ সালের ১ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সংসদীয় আইন ১০, ১৯৭৩ র বলে “বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)” নাম ধারণ করে।

রাজধানী ঢাকা থেকে ৩৬ কিলোমিটার উত্তরে জয়দেবপুরে অবস্থিত ব্রি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা এবং বাংলাদেশের জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেমের একটি অন্যতম প্রধান স্তম্ভ।

আরও পড়ুন  মরক্কোয় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮২০

বর্তমানে ব্রি  সংসদীয় আইন ১৯, ২০১৭ মোতাবেক পরিচালিত হচ্ছে। মহাপরিচালক হচ্ছেন ব্রি-র সংস্থা প্রধান। তার নেতৃত্বে একটি ১৩ সদস্যবিশিষ্ট ব্যবস্থাপনা বোর্ড ব্রি’র সার্বিক নীতি নির্ধারণ ও পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে। প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানটি ১১টি গবেষণা বিভাগ ও ৩টি আঞ্চলিক কার্যালয় নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। সময়ের সাথে সাথে দ্রুত আধুনিক উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ধানের জাত ও উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা, কাজের গুণগত ও পরিমাণগত পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন গবেষণা বিভাগ ও আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন ও গবেষণা সুযোগ-সুবিধাদি সম্প্রসারণ করা হয়।

বর্তমানে ব্রি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৯টি গবেষণা বিভাগ ও দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কৃষি-পরিবেশ অঞ্চলে স্হাপিত মোট ১১টি আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সকল গবেষণা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে ৮টি বহু বিষয়ভিত্তিক প্রোগ্রাম এরিয়ার মাধ্যমে। ইনস্টিটিউটে এখন ৩০৮ জন বিজ্ঞানীসহ ৭৮৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন।

টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন অংশীদারিত্বে সহযোগিতার লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুসারে ব্রি’তে প্রযুক্তি কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ব্রি’র গত ৫০ বছরে গর্ব ও সাফল্যের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বেলুন ও পায়রা উড়াবেন।

আরও পড়ুন  পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করেছিলেন হিলারি: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বৃক্ষরোপণ, ব্রি ল্যাবরোটরিজ পরিদর্শন, ব্রি’র বিভিন্ন উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন এবং ‘ধান কাব্য’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এ সময় ‘ব্রি’র গর্ব ও সাফল্যের ৫০ বছর’ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে।

বেলা ১১টায় ব্রি হেলিপ্যাডে পৌঁছার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি থাকবেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অফ ফুড সিকিউরিটি (জিআইএফএস), কানাডার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও নির্বাহী পরিচালক স্টিভেন ওয়েব, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইআরআরআই), ফিলিপাইনের মহাপরিচালক জিন বালফে, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বকতিয়ার এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. এম শাহজাহান কবিরসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।

আরও পড়ুন  জাতীয়করণের দাবিতে আমরণ অনশনের ঘোষণা মাধ্যমিক শিক্ষকদের

ব্রি এ পর্যন্ত ১১১টি ধানের আধুনিক জাত উদ্ভাবন ও অবমুক্ত করেছে, ১০৪টি ইনব্রিড ও ৭টি হাইব্রিড। এর মধ্যে ২৪টি বিভিন্ন সহিষ্ণু জাত, যার ১০টি লবণাক্ত সহিষ্ণু, তিনটি নিমজ্জন সহিষ্ণু, তিনটি খরা সহিষ্ণু, চারটি শীত সহিষ্ণু, দু’টি জলোচ্ছ্বাস সহিষ্ণু, একটি আধা-গভীর জল এবং একটি দ্বৈত সহিষ্ণু (সাল+সাব)।

এছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ১৩টি প্রিমিয়াম মানের, পাঁচটি জেডএন-সমৃদ্ধ এবং তিনটি নিম্ন জিআই (গ্লাইসেমিক ইনডেক্স) ধান তৈরি করা হয়েছে।

জানা গেছে, দেশের মোট ধানি জমির ৮০ শতাংশেরও বেশি ব্রি ধানের উৎপাদন করা হয়েছে এবং জাতীয় ধান উৎপাদনে এর অবদান প্রায় ৯১ শতাংশ। স্বাধীনতার পর থেকে জনসংখ্যা আড়াই গুণ বাড়লেও ধানের উৎপাদন সাড়ে তিন গুণেরও বেশি বেড়েছে। বাংলাদেশ ২০১৩ সালে চাল রপ্তানি শুরু করে এবং এই অসাধারণ অর্জনের পেছনে মূল অবদান রয়েছে যে প্রতিষ্ঠানের সেটি হল বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)।

ট্যাগঃ

এ বিভাগের আরও

সর্বশেষ