দেশের ৩০টি ব্যাংকের এমডিসহ ৪৫ জন শিগগিরিই আমেরিকা যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য ডলারের প্রবাহ বাড়াতে বিশেষ প্রচার। এ কাজের জন্য তাদের বিপুল ব্যয়ের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শুধু গানের আয়োজন এবং একটি নৈশভোজের অনুষ্ঠানের খরচ ধারা হয়েছে ৫৫ হাজার ডলার। বাংলাদেশের মুদ্রায় এটি ৬৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত ডলারের দর এখন ১১৭ টাকা। কিন্তু ডিনার অনুষ্ঠানের খরচের প্রতি ডলারের দর ধরা হয়েছে ১২৩ টাকা।
শুধু তাই নয়, এ সফরের জন্য প্রত্যেক এমডিকে খরচ করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১৬ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল একটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, ডলারের প্রবাহ বাড়াতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিশেষ প্রচারে নামছে। এর অংশ হিসেবে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করা হবে। এজন্য নিউইয়র্কের একটি হোটেলে প্রবাসীদের জন্য অফশোর ব্যাংকিং ফিক্সড ডিপোজিট সংক্রান্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠিত হবে আসছে ২৪ মে।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি) আমেরিকা যাচ্ছেন। এই প্রথমবারের মতো ব্যাংকগুলোর পক্ষে বিদেশে এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংক এমডিদের খরচের সর্বোচ্চ খরচের যে অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, সে হিসেবে ৩০ জন এমডি খরচ করতে পারবেন ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা বা ৪ লাখ ১০ হাজার ২৫৬ ডলার। একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর কাজী সাইদুর রহমানসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা। অর্থাৎ আমেরিকার এই সফরে দেশের খরচ হওয়ার কথা সাড়ে ৬ লাখ ডলারের বেশি।
ডিনার ও বিনোদনের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেনআমেরিকায় নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত এইচ ই মোহাম্মদ ইমরান। বিশেষ অতিথি থাকবেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত, ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হুদা।
একজন কর্মকর্তা জানান, অনুষ্ঠানে রাতের খাবারের খরচ ধরা হয়েছে ২৬ হাজার ৫০০ ডলার। হল ভাড়া ৫ হাজার ডলার। লাইটিং ও সাউন্ড সিস্টেমের জন্য ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৬০০ ডলার। গায়ক এবং নিত্য শিল্পীর জন্য বরাদ্দ ২ হাজার ৭০০ ডলার, ও বাদ্যযন্ত্রের খরচ ১ হাজার ৬০০ ডলার। এছাড়া এজেন্সি সার্ভিস ফি ৬ হাজার, পার্কিং ৩ হাজার, পোস্টার-ব্যানার খরচ ১ হাজার ৫০০, নিরাপত্তায় ৫০০ ও অন্যান্য খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ডলার। সবমিলিয়ে এক ডিনার ও বিনোদনেই ৪টি ব্যাংক খরচ করবে ৫৫ হাজার ডলার।
খরচ বহন করা ব্যাংকগুলোর তালিকায় রয়েছে, বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ বাংলা, সিটি ও সরকারি খাতের অগ্রণী ব্যাংক। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসেন, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এমডি আবুল কাশেম মো. শিরিন, অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মুরশেদুল কবীর ও সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন।