ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে বরখাস্ত করেছেন। এর একদিন আগে সরকারের বিতর্কিত বিচারিক সংস্কারের পরিকল্পনা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী রবিবার (২৬ মার্চ) গ্যালান্টকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন। এ ঘোষণার পর হাজার হাজার বিক্ষোভকারীরা তেল আবিবের রাস্তায় নেমে একটি প্রধান মহাসড়ক অবরোধ করে।
নেতানিয়াহুর ডানপন্থি লিকুদ পার্টির একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য গ্যালান্ট। যিনি শনিবার রাতে দলের প্রথম কোনো নেতা হিসেবে সরাকরের বিচার বিভাগ সংস্কারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেন। এর মধ্যে দিয়ে দেশটির ডানপন্থি সরকারের জোটে এ প্রথমবারের মতো ফাটলের ইঙ্গিত দেখা গেল।
তাকে বরখাস্ত করার পরই নেতানিয়াহু এক টুইট বার্তায় বলেন, যেকোনো ধরনের প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে অবশ্যই দৃঢ় থাকতে হবে।
বরখাস্তের ঘোষণার পরপরই গ্যালান্টও একটি টুইট বার্তা প্রকাশ করেন। এতে তিনি বলেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তা সবসময় আমার জীবনের লক্ষ্য ছিল এবং থাকবে।
এর আগে গ্যালান্ট এ বিক্ষোভ সামাজিক বিপর্যয় তৈরি করছে এবং সেটি ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মন্তব্য করেন।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ ইসরায়েলের কট্টর রাজনীতিবিদরা দীর্ঘদিন ধরে দেশটির বিচারব্যবস্থা সংস্কারের কথা বলে আসছেন। নতুন সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা ওই সব দাবি নিয়ে গত জানুয়ারিতে একটি সংস্কার প্রস্তাব প্রকাশ করেন।
প্রস্তাবে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের কোনো রায় বদলে দেওয়ার অধিকার পার্লামেন্টের থাকতে হবে। বিচারক ও বিচারপতি নিয়োগে পার্লামেন্টের কথাই চূড়ান্ত হবে।
জানুয়ারির প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে দেশটির জনতা। বিক্ষোভকারীদের মতে, নেতানিয়াহু এবং তার ডানপন্থি ও ধর্মীয় মিত্ররা পার্লামেন্টে এমন আইন পাস করতে যাচ্ছে, যা আইনসভা ও নির্বাহী বিভাগে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতাকে সীমিত করবে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির পুরোনো অভিযোগও রয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্তের কারণে এর আগে তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদও ছাড়তে হয়েছিল। সমালোচকরা বলছেন, তাই ফের প্রধানমন্ত্রী হয়ে শুরুতেই তিনি আদালতের ক্ষমতার লাগাম টেনে ধরতে চাইছেন, যা সাধারণ ইসরায়েলিরা মানতে মোটেও রাজি নয়।
তবে নেতানিয়াহু কোনো অন্যায় করেননি বলে অস্বীকার করে জানান, নতুন আদালত ব্যবস্থা সংশোধনের সরকারি পরিকল্পনার সঙ্গে তার বিচারের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই ১২ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এ সংস্কারের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চললেও নিজের সিদ্ধান্তে আটল রয়েছে ডানপন্থি নেতানিয়াহু সরকার।
সূত্র- আলজাজিরা