আবারো উন্নয়ন ভোগান্তিতে পড়তে যাচ্ছে চট্টগ্রাম নগরবাসী। স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে নগরীর ৩৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকার রাস্তাঘাট কাটা পড়বে। প্রতিটি রাস্তা প্রায় ১২ থেকে ১৫ ফুট গভীর পর্যন্ত কাটা হবে। এতে নগরবাসীর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছাবে। তাই প্রকল্প বাস্তবায়নে নগরবাসীর সহায়তা চাইলেন চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের পাঁচ তারকা হোটেল র্যাডিসন ব্লু বে ভিউতে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে মতবিনিময় সভায় ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, ‘উন্নয়নের জন্য একটু কষ্ট মেনে নিতে হবে। তাই নগরবাসীর কাছ থেকে সহযোগিতা চাই।’
তিনি বলেন, আমরা ২০২৬ সালের মধ্যে নগরীর একটি অংশে স্যুয়ারেজ প্রকল্পের বাস্তবায়নের কাজ শেষ করতে চাই। এ জন্য নগরীর অনেকগুলো ওয়ার্ডে রাস্তা কাটা হবে। তবে রাস্তা যাতে না ভাঙে সে জন্য আমরা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেব।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আপনারা (ওয়াসা) পুরো নগরীতে একসঙ্গে কাজ শুরু না করে পর্যায়ক্রমে কাজ করবেন। একটি ওয়ার্ডের কাজ শেষ হলে পরবর্তী ওয়ার্ডে কাজ শুরু করলে নগরবাসীর দুর্ভোগ কিছুটা কম হবে। আর পুরো কাজটি সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে করতে হবে।
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে অংশগ্রহণ করে দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, পানির অপর নাম জীবন। স্যুয়ারেজে চট্টগ্রাম ঢাকা থেকে প্রায় ১০০ বছর পিছিয়ে। ঢাকায় ১৯২৩ সালে স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও চট্টগ্রামে এখন শুরু হতে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ, স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী দক্ষিণ কোরিয়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাইওং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশনের প্রতিনিধি অনশন জু, চায়না প্রতিষ্ঠান জেভি অব ঝংনাম সিনো হাইড্রোর প্রতিনিধি এন্ড্রু এবং জেভি অব ইসি ইসির প্রতিনিধি স্প্রিং সাংজাই।
উল্লেখ্য, ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামে ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। নগরীর হালিশহর আনন্দবাজার এলাকায় ১৬৫ একর জায়গায় এই ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট গড়ে তোলা হচ্ছে। এখন গৃহস্থালী পর্যায়ে সংযোগ লাইন লাগানোর কাজ শুরু হবে। নগরীরে ৬টি জোনে ভাগ করে স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও এখন একটি জোনের কাজ শুরু হয়েছে। এই জোনের আওতায় কোতোয়ালি, বাটালিহিল, মাঝিরঘাট, মাদারবাড়ী, আগ্রাবাদ, টাইগারপাস, আমবাগান, নয়াবাজার, চৌমুহনী, উত্তর হালিশহর, হালিশহর আনন্দবাজার এলাকায় ২৮ হাজার সংযোগ লাইন দেয়া হবে।