আবার ছড়িয়ে পড়েছে কোটি কোটি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া বিউবোনিক প্লেগ। যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে এ রোগটি আবারও সংক্রমিত হতে শুরু করেছে। ওরেগন রাজ্যের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডেসচুটস কাউন্টি হেলথ সার্ভিস জানিয়েছে, গত সপ্তাহে এ প্লেগে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। পোষা বিড়াল থেকে ওই ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আক্রান্ত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা চলছে। কান্ট্রি হেলথ অফিসার রিচার্ড ফাউসেট জানিয়েছেন, আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পোষা প্রাণীর সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
বিউবোনিক প্লেগ কী?
ক্যানসারের গবেষণায় নতুন দুয়ার, মানবেদেহে মিলবে প্রতিষেধক বিউবোনিক প্লেগ বিরল ধরনের রোগ যা ব্লাক ডেথ হিসেবেও পরিচিত। ইউরোপের এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা এ রোগে মারা গিয়েছিলেন। চতুর্দশ শতকে ইউরোপজুড়ে ব্যাপকহারে এ রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। এতে পাঁচ কোটির বেশি মানুষ মারা যায়। মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ মারাত্মক মহামারির অন্যতম এটি।
চিকিসৎসকরা এখনো এ রোগটিকে বিপজ্জনক রোগ হিসেবে মনে করেন। যদিও এটির সংক্রমণ কমে বর্তমানে বিরল রোগে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটির চিকিৎসাও সম্ভব।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, ইঁদুর বা কাঠবিড়ালির মতো সংক্রমিত প্রাণীকে বিড়াল খেলে আক্রান্ত হতে পারে। আবার বিড়ালের মাধ্যমে খুব সহজে এটি মানুষ সংক্রমিত হতে পারে।
এ রোগের কারণে লিম্ফ নোড ফুলে যেতে পারে। এমন উপসর্গের কারণেই রোগটির এ নামকরণ করা হয়েছে। এর ফলে বোগল, কোমর ও ঘাড়ে ডিমের মতো করে ফুলে যায়। এসব জায়গা থেকে পুঁজও বের হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সংক্রমিত প্রাণী বা মাছির সংস্পর্শে আসার আট দিন পরে প্লেগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এর লক্ষণগুলো হলো আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর, বমি বমি ভাব, দুর্বলতা, ঠান্ডা এবং পেশি ব্যথা হতে পারে। তবে দ্রুত চিকিৎসা না হলে বিউবোনিক প্লেগ সেপ্টিসেমিক প্লেগে পরিণত হতে পারে। এতে করে রক্ত প্রবাহের সংক্রমণ বা ফুসফুসকে প্রভাবিতকারী নিউমোনিক প্লেগ হতে পারে।
এছাড়াও আরও যেসব লক্ষণ রয়েছে তা হলো ঠান্ডা লাগা, হঠাৎ তীব্র জ্বর, পেট, বাহু এবং পায়ে ব্যথা, লিম্ফ নোডগুলোতে ফোলা ইত্যাদি। এর আগে সবশেষ ২০১৫ সালে রোগটির সংক্রমণ চিহ্নিত করা হয়েছিল।