ঢাকা, শুক্রবার - ২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কাপ্তাই রাস্তার মাথায় টাকার জোরে ব্যাটারি রিকশা, চাঁদাবাজিতে ‘বেলাল গংরা’

ছবি- ভয়েস অফ এশিয়া

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

চট্টগ্রাম নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় বেড়েছে ব্যাটারি চালিত রিকশার দৌরাত্ম্য। আর এসব রিকশাকে ঘিরে চলছে রমরমা চাঁদাবাজিও। চাঁদা আদায়ে সক্রিয় একটি গ্রুপ। ট্রাফিক ও থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে চলছে এসব চাঁদাবাজি।

সাম্প্রতিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করে ব্যাটারি চালিত রিকশা নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তবে এসব মানতে নারাজ কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকার চোরাই রিকশার গডফাদার এবং চাঁদাবাজ বেলালগং।

জানা গেছে, কাপ্তাই সড়কে মদুনাঘাট হতে রাস্তার মাথা আর কালুরঘাট হতে রাস্তার মাথা পর্যন্ত প্রতিদিন চলাচল করছে হাজারখানেক ব্যাটারি চালিত রিকশা। মাঝেমধ্যে ট্রাফিক পুলিশের লোক দেখানো অভিযানও চলে বেলাল-মহিউদ্দীন গংদের ইশারায়। তবে টাকার বিনিময়ে জায়গায় করা হয় ম্যানেজ। এছাড়া থানা পুলিশকে নিয়মিত দেওয়া হয় মাসোয়ারা। এমন অভিযোগ ব্যাটারি চালিত রিকশা চালকসহ সর্বসাধারণের।

এ লাইন নিয়ন্ত্রণে মরিয়া বেলাল-মহিউদ্দীন গংরা। গ্রুপের সদস্যরা প্রকাশ্যে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত। এ নিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা। এত কিছুর পরও কে শুনে কার কথা। চাঁদাবাজদের রক্ষা করার দায়িত্ব উপরমহল আর সুবিধাভোগীদের।

আরও পড়ুন  চট্টগ্রাম-৮: 'টক অব দ্য সিটি' নৌকার মাঝি নোমান আল মাহমুদ

সরেজমিন দেখা গেছে, কাপ্তাই রাস্তার মাথার আশপাশে ব্যাটারি চালিত রিকশার ছড়াছড়ি। এলোমেলোভাবে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানামা করছে। থানার টহল গাড়ির সামনেই বীরদর্পে আসা-যাওয়া করছে চালকরা। উঠানামা ভাড়া ২০ টাকা। এসব রিকশা নিয়ন্ত্রণে বেলাল গংরা তো আছেনই। পুলিশ আসতে দেখলে দ্রুত খবর পৌঁছে দেয় চালকদের কাছে।

স্থানীয়রা বলছেন, আগে চললেও নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু নতুন নির্দেশনা আসার পর থেকে তা দ্বিগুণ বেড়েছে। অভিযোগ দিলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। অনেক পথচারী আহত হয়েছে।

রিকশা চালক কিশোর রকি, হাসান ও খালেক ভয়েস অফ এশিয়াকে জানান, প্রতিদিন ১০০/১২০ টাকা করে জমা দিতে হয়। তারা টাকা না দিলে গাড়ি চালাতে ভয়ভীতি দেখায়। এ গ্রুপে সদস্য সংখ্যা অনেক। টাকা না দিলে ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হয়। ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি নিয়ে যায় আবার ২০০০(দুই) হাজার টাকায় আপোসরফা হয়। টোকেন নিতে বাধ্য করা হয়। গাড়িতে লাগানো হয় স্টীকার বা টোকেন। এ টোকেন থাকলেই থানা ও ট্রাফিক পুলিশ কিছুই করেনা। নিঃস্ব হচ্ছে চালক, চাঁদাবাজির ঠেলায় আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বেলাল গংরা।

আরও পড়ুন  ‘গোল্ড কার্ড’ ভিসা চালুর ঘোষণা ট্রাম্পের, ৫ মিলিয়ন ডলারে মিলবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব

কুতুবদিয়ার বেলাল কাপ্তাই রাস্তার মাথায় এসে শ্রমিক নেতার তকমাও লাগিয়েছেন। টাকার পাহাড় গড়েছেন অবৈধ সব কর্মকান্ড করে। বেলালের আবার আরও একটা সাম্রাজ্য আছে চোরাই গাড়ীর গ্যারেজ। বিভিন্ন এলাকা থেকে গাড়ি চুরি করে এনে দিলেই চোরেরা পায় নগদ অর্থ আর কপাল পুড়ে রিকশা মালিকের।

জানা গেছে, বেলালের অবৈধ কাজ পরিচালনা করেন দুজন। একজনের নাম রাজু। সে মোটর সাইকেল দাপিয়ে বেড়ায়। রিকশার টোকেন আর দৈনিক চাঁদা সংগ্রহ করেন এ রাজু। হাতিয়ার ছেলে রাজু। রাজুর নামে ৬/৭ টি মামলার বিষয়ে হাতিয়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। রাজু আত্নগোপনে আছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। আরেকজনের নাম রাজীব। সে পুলিশ ফাঁড়ি ও ট্রাফিক পুলিশের সাথে থাকেন। ফাঁড়ি এবং টিআই-সার্জেন্ট ম্যানেজ করা তার দায়িত্ব।

আরও পড়ুন  ফিলিপাইনে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচলে ট্রাফিক, টিআই ও থানা-পুলিশকে নিয়মিত মাসোয়ারা দেওয়া হয়। গ্যারেজ মালিক ও গাড়ির মালিক চালকদের কাছ থেকে নিয়মিত ম্যানেজের টাকা আদায় করেন। যারা টাকা দেন না তাদের গাড়ি অভিযানে ধরে নিয়ে করা হয় জরিমানা।

এ বিষয়ে জানতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের একটাই বাক্য ‘আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো, এ ধরনের কোন অভিযোগ আমরা পাইনি’।

বেলাল গংদের অবৈধ সম্পদ আর কোটি টাকার মাসিক চাঁদাবাজি রুখবে কে! সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আর দুদক কি এগিয়ে আসবেন এ চাঁদাবাজি বন্ধে। টাকার পাহাড় গড়ার রহস্য উদঘাটনে। পর্ব-১

ট্যাগঃ