দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আসন বিন্যাসের সমঝোতায় নৌকা হারালেন চট্টগ্রামের দুই নেতা।
তারা হলেন- চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া নোমান আল মাহমুদ। সেই আসন পেয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে নৌকার মাঝি হওয়া উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম। এ আসন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বরাবরে পাঠানো এক চিঠিতে চট্টগ্রামের ২টিসহ মোট ২৫টি আসনে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে অনুরোধ জানান দলীয় ও মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।
দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া নির্বাচন কমিশনে এ চিঠি পৌঁছে দেন।
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী-আংশিক বায়েজিদ) আসনে এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তবে এই আসনটি আওয়ামী লীগ এবারও ছেড়ে দিয়েছে জাতীয় পার্টিকে। আর এই আসন থেকে নির্বাচন করবেন টানা তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। ফলে মনোনয়ন পেয়েও ভোট যুদ্ধে নামতে পারবেন না এম এ সালাম।
এ ব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন নোমান বলেন, সিদ্ধান্তটা আমাদের নেতাকর্মীদের হতাশ করেছে। জাতীয় পার্টির জন্য আমাদের নেতাকর্মীরা কাজ করবে না।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থী না থাকায় ধারণা করা হচ্ছে তিনবারের জয়ী এমপি আনিসুল নির্বাচনী বৈতরণী পার করবেন খুব সহজেই।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম-৮ আসনের (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) সাবেক এমপি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিনের মৃত্যুতে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে সংসদে পৌঁছেন নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ। এবারও এ আসনে মনোনয়ন দিয়ে নৌকার বহরে যুক্ত করা হয়েছিল তাঁকে। মনোনয়নপত্র বৈধতার যাচাই-বাছাইয়েও টিকে যান, তবে সমঝোতার কারণে ভোট যুদ্ধ থেকে সরতে হচ্ছে তাকে। এই আসন আওয়ামী লীগ ছেড়েছে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠের হাতে।
এ প্রসঙ্গে জানতে রাজনীতিতে নোমান আল মাহমুদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মিনহাজুল আবেদিন চৌধুরী সায়েম বলেন, নোমান ভাই ত্যাগী নেতা। সেজন্যই নেত্রী তাকে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দিয়ে এমপি নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন। এবার সরে দাঁড়াতে হলেও তাকে নিশ্চয়ই নেত্রী ভবিষ্যতে ভিন্নভাবে পুরস্কৃত করবেন। খারাপ লাগলেও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার মানসিকতা আমাদের আছে।
এদিকে চট্টগ্রামে জোট থেকে মনোননয়ন পাওয়া সোলায়মান আলম বলেন, আমার দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ চট্টগ্রামের উন্নয়ন করেছেন। আমি নিজেও র্দীঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির চট্টগ্রামের রাজনীতিতে সক্রিয়। আমি নির্বাচিত হয়ে অবহেলিত বোয়ালখালী মানুষের পাশে থাকতে চাই। আমাকে নির্বাচিত করলে সবসময় এই সংসদীয় আসনের মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে পাবে। আগামী ৭ জানুয়ারি জনগণ আমাকে হতাশ করবে না।