ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় লাশের মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হচ্ছে। দুই দেশে এরই মধ্যে প্রাণহানি ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। দুই দেশেরই বিভিন্ন জনপদ যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপে চলছে স্বজন হারানোর আহাজারি।
তুরস্কের দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে সোমবার ভোরে আঘাত হানা ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫২১ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ২৮৪ জনেরই প্রাণহানি হয়েছে তুরস্কে, আর ২৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে সিরিয়ায়।
তুরস্ক সরকারের তথ্যমতে, ভূমিকম্পে দেশটির অন্তত ১০টি শহর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসে পড়েছে শত শত ভবন। এ পর্যন্ত অন্তত ২৮৪ জনের প্রাণহানির খবর মিলেছে, আহত হয়েছেন ২ হাজার ৩২৩ জন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিবেশী সিরিয়াকেও বিপর্যস্ত করে দিয়েছে ভূমিকম্পটি। সেখানকার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ভূমিকম্প দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের লাটাকিয়া থেকে রাজধানী দামেস্ক পর্যন্ত কাঁপিয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আলেপ্পো শহর, সেখানে বহু ভবন ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২৩৭ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬০০ জনেরও বেশি।
ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে সিরিয়ার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘হোয়াইট হেলমেটস’।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমান সোয়লু জানান, ভূমিকম্পে কাহরামানমারাস, হাতায়, গাজিয়ানতেপ, ওসমানীয়ে, আদিয়ামান, মালাত্যা, সানলুরফা, আদানা, দিয়ারবাকির ও কিলিস শহর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী সব সংস্থাকে ভূমিকম্পকবলিত এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে এবং সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মালাত্যা, ওসমানীয়ে, দিয়ারবাকির, সানলুরফাসহ বিভিন্ন এলাকায় ধসে পড়েছে শত শত ভবন। তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সি, টিআরটি ওয়ার্ল্ডসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, জনপদের পর জনপদ যেন বিপর্যয় পরবর্তী ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই ধ্বংসস্তূপেই জীবিতদের সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা চলছে।