ঢাকা, সোমবার - ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দলীয় পদ হারালেন কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর

কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর আলম

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেওয়া আর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে এবার কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর আলমকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ।

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।

এতে উল্লেখ্য করা হয়, প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য রাখায় ও ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের জন্য চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম এমপিকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তার সভাপতির পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হল এবং কেন তাকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কার করা হবে না, তা আগামী ৭ (সাত) দিনের মধ্যে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ বরাবরে তা কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হল। ৭(সাত) দিনের মধ্যে যদি জবাব না দেওয়া হয় তবে তাকে স্থায়ী ভাবে বহিস্কারের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরাবরে সুপারিশ করা হবে।

আরও পড়ুন  সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি মূল্যায়নে ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল

জানা গেছে, সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলমকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী অন্যায় করেছেন দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে কঠোর ভাষায় বক্তব্য রেখেছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে এমপি জাফরকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ করেননি। তিনি মনোনয়ন না পেয়ে ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটায় পেকুয়ায় নিজের সমর্থনে আয়োজিত এক সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে জাফর আলম দলের প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, আমি একবার মনোনয়ন পেয়েছি। কিন্তু আমি শতবার মৃত্যুর মুখে আপনার জন্য গিয়েছি। আমি আপনার জন্য আমার জীবনে সবকিছু উজাড় করে দিয়েছি। আমি কক্সবাজারে এক মিটিংয়ে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা খরচ করেছি। আপনাদেরকে থ্রি স্টার হোটেলে রেখেছি। মাতার বাড়িতে ৪০ হাজার মানুষকে একদিনের খাবার দিয়ে এক হাজার ট্রাক গাড়ি দিয়ে আমি জনসভাকে সফল করেছি। আপনি (শেখ হাসিনা) সেখানে ঘোষণা করলেন আশেক উল্লাহ রফিক এমপি প্রার্থী।

আরও পড়ুন  জমির বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ৭

হুমকি স্বরুপ এমপি জাফর প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘শোনেন..!!! নেত্রী, আল্লাহ উপরে। আমি দোষ করলে আল্লাহ আমার বিচার করবে। কিন্তু আমি মনে করেছি এটা আমার প্রতি অবিচার হয়েছে। আমার মতো একজন সহজ সরল কর্মীকে, আমাকে বারবার ঠকিয়ে আরেকজনের কাঁধে নৌকা দিয়ে আমার কাছ থেকে নৌকা কেড়ে নিয়েছিলেন। সেদিনও আমি হাসিমুখে মেনে নিয়েছি। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাকে ভোট দিতে না পেরে নেতাকর্মীরা চোখের জল ফেলে চলে গেছে। সেদিনও আমি আপনার কথা শুনেছি।

এমপি জাফর আলম বলেন, সুতরাং, এখন আপনি বলেছেন, সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র ভোট করতে পারবেন। আমি স্বতন্ত্র ভোট করতেছি। এখানে যদি আমি কারো কোন ধরনের অশুভ পায়তারা দেখি আমরা চকরিয়ার মানুষ। শহীদ আব্দুল হামিদের চকরিয়া, আবুল কালমের চকরিয়া-পেকুয়া এটা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চকরিয়া। এখানে কোন অন্যায় আমরা বরদাস্ত করবো..না, করবো না.., করবো.. না।

জাফর আলম আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমার চেয়ে নৌকাকে ভালবাসে এমন কে আছে। দিনে নৌকা, রাতে বিএনপি, কার টেলিফোন রিসিভ কর, কার জায়গা দখল কর। সব আমার কাছে খবর আছে। আমাকে পেকুয়ার ভোট দিবেন কি, দিবেন না সেটি আপনাদের ব্যাপার। চাঁদাবাজি, দখলবাজি এগুলা চলবে..না চলবে..না চলবে..না। সোজা কথা।

আরও পড়ুন  অস্ত্র হাতে সরকার দলীয় এমপি'র মিছিল, তদন্তের নির্দেশ

নিজের অবস্থান তুলে ধরে জাফর বলেন এখনো বলছি ইনশাল্লাহ, আল্লাহর যদি রহমত থাকে জাফর জনতা.., জাফর জনতা। আল্লাহর রহমত ছাড়া আমাকে রোখার সাধ্য নাই কারো। আমার মার্কা ট্রাক, কেন ট্রাক নিয়েছি..। নৌকার অবস্থা বেশি খারাপ। নৌকাকে ট্রাকে তুলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে আবার বলবো, ট্রাক মনে করিয়েন না আপা, এটা নৌকা। টিক আছে। আমি আপনার জাফর।

বক্তব্যে আক্ষেপ করে জাফর আলম আরও বলেন,  প্রধানমন্ত্রী একদিন বলতেন ‘আমার জাফর’। কেন জানি না, কোন কালো ইশরায় আমি আপনার পর হয়ে গেলাম।

এই বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন প্রধানমন্ত্রী নিয়ে কটুক্তি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে তাই কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং পরবর্তীতে যা ব্যবস্থা নেয়া সেটি গ্রহন করব।

আলোচিত সংবাদ