গত বছরের ২০ মে থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত দেশজুড়ে চার ধাপে ভোটারযোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। যাতে ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম হালনাগাদে তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তাতে দেখা গেছে এবারের ভোটার তালিকা হালনাগাদ সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, এবার খসড়া হিসেবে দেশে ভোটারসংখ্যা দাঁড়াবে ১২ কোটিরও বেশি। এরপর ভোটারদের দাবি ও আপত্তি শেষে আগামী ২ মার্চ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। তখন ভোটারসংখ্যা কমতে-বাড়তে পারে।
রবিবার (১৫ জানুয়ারি) খসড়া এ তালিকা প্রকাশ করার কথা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম এ খসড়া প্রকাশ করবেন।
জানা গেছে, হালনাগাদে ১৫-১৭ বছর বয়সী এবং ভোটারযোগ্য বাদ পড়া মিলিয়ে ১ কোটিরও বেশি নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করেছে নির্বাচন কমিশন, যা গত ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংগ্রহ করা তথ্যে ৯.৭ শতাংশ। এটি বিদ্যমান লক্ষ্যমাত্রা ভোটারের ৭.৫ শতাংশ হারে ৮৬ লাখেরও বেশি।
নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে যে তথ্য নিয়েছে তাতে ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম হালনাগাদে তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
অর্থাৎ, পরপর তিন বছরে যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য হবেন এবার তাদের তথ্য অগ্রিম সংগ্রহ করা হয়। এ ছাড়া আগে বিভিন্ন কারণে যারা ভোটার হতে পারেননি তারাও হালনাগাদে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
এর আগে গত ২ জানুয়ারি ওই খসড়া প্রকাশের দিন নির্ধারিত থাকলেও গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনসহ নানা কারণে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, ভোটার তালিকা বিধিমালা অনুযায়ী ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চ ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিধান আছে। ওই বিধান অনুযায়ী প্রতিবছর ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। খসড়া তালিকায় আসা আপত্তি নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয় ২ মার্চ।
তবে এবার খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ পিছিয়ে গেলেও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সময় অপরিবর্তিত থাকবে।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন। সর্বশেষ ২০২২ সালের ২ মার্চ দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন। ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়া চলমান থাকায় বর্তমানে ভোটার সংখ্যা আরও কয়েক লাখ বেশি।
এর আগে ২০২১ সালে ১১ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার, ২০১৯-২০২০ সালে ১১ কোটি ১২ লাখ ৮৪ হাজারও বেশি ভোটার ছিলেন।
ইসির খসড়া তথ্য অনুযায়ী, এবারের মোট ভোটারের মধ্যে ১৮ থেকে ২১ বছর বয়সী ৬৬ লাখ ৩৮ হাজার ৫৬৬ জন। ২২ থেকে ২৫ বছর বয়সী ১ কোটি ৮ লাখ ৭ হাজার ৮৬১ জন। ২৬ থেকে ২৯ বছর বয়সী ১ কোটি ৭ লাখ ৭ হাজার ৫৩৪ জন।
এছাড়া ৩০ থেকে ৩৩ বছর বয়সী ভোটার ১ কোটি ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৮৮১ জন। ৩৪ থেকে ৩৭ বছর বয়সী ভোটার ১ কোটি ৪২ লাখ ১৮ হাজার ২৩২ জন। ৩৮ থেকে ৪১ বছর বয়সী ভোটার ১ কোটি ১৮ লাখ ৬৮ হাজার ৩১৯ জন। ৪২ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ভোটার ১ কোটি ৬ লাখ ৭৬ হাজার ২৭২ জন। ৪৬ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ভোটার ৬২ লাখ ৬১ হাজার ৬৫ জন। ৫০ থেকে ৫৩ বছর বয়সী ভোটার ৭৯ লাখ ৭২ হাজার ৯২৭ জন। ৫৪ থেকে ৫৭ বছর বয়সী ভোটার ৬৭ লাখ ২৯ হাজার ৬১৪ জন। ৫৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী ভোটার ৪১ লাখ ৯ হাজার ৫০৮ জন এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী ভোটারের সংখ্যা ১ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৯ জন।