ঢাকা, সোমবার - ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারের ইতিবাচক সাড়া নেই, আল-জাজিরাকে প্রধানমন্ত্রী

ছবিঃ সংগৃহীত

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

মিয়ানমারে নির্যাতন-নিপীড়ন, হত্যা ও ধর্ষণের শিকার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছে বলে আবারো জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশে আশ্রিত এই শরণার্থীদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ আলোচনা শুরু করলেও মিয়ানমারের ইতিবাচক সাড়া না দেয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেছেন তিনি।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের দোহায় স্বল্পোন্নত দেশসমূহের ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলনের ফাঁকে আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে কথা বলেন শেখ হাসিনা।

আল জাজিরার সাংবাদিক নিক ক্লার্কের নেওয়া সাক্ষাতকারটির সংক্ষিপ্ত একটি অংশ সম্প্রচার করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি। পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকারটি শনিবার বাংলাদেশ সময় ১০টায় প্রচার করা হবে।

সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি এবং সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেন। এই শরণার্থীরা যে নিজেরাই নিজেদের সঙ্গে সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত এবং মাদক ও মানবপাচারসহ নানা অপরাধে জড়াচ্ছে তাও তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।

আরও পড়ুন  ময়মনসিংহে বন্দুকযুদ্ধে যুবক নিহত

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড ও পরিস্থিতির বিষয়ে নিক ক্লার্কের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়ন শুরু হলে তারা নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষণের শিকার হয়। সেখানে তখন অনেক কিছুই ঘটেছে।

সত্যিকার অর্থে এটা আমাদের খুব খারাপ লেগেছিল। এরপর আমরা সীমান্ত খুলে দিয়ে তাদের আসতে দিই। পাশাপাশি আমরা মানবিক দিক থেকে তাদের সকলের জন্য আশ্রয় ও চিকিৎসা দিই।

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশের উদ্যোগের বিষয়টি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করি। মিয়ানমারকে বলি, রোহিঙ্গারা তোমাদের দেশের নাগরিক এবং তাদের ফিরিয়ে নেওয়া উচিত। দুর্ভাগ্যক্রমে, তারা ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে না। আমি মনে করি, এই লোকদের তাদের নিজেদের বাড়ি এবং দেশে ফিরে যাওয়া উচিত।

আরও পড়ুন  জো বাইডেনের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেলেন শেখ হাসিনা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ সৃষ্টি করার বিষয়টিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এটাকে কঠিন বলেও মনে করেন তিনি। বাংলাদেশ যে নোয়াখালীর অদূরে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বিকল্প আবাসন তৈরি করেছে সে বিষয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের আলাদা জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করেছি। ভাসান চর একটি ভালো জায়গা, থাকার জন্য ভালো জায়গা…আমরা সেখানে তাদের শিশুদের জন্য ভালো থাকার এবং চমৎকার সুবিধার ব্যবস্থা করেছি।

বর্তমানে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর অবস্থা যে খুব একটা ভালো নয় সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা নিজেরাই এখন একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত। তারা মাদক, অস্ত্র ও মানবপাচারের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এছাড়া তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।

আরও পড়ুন  পুলিশের অনুমতি নিয়ে সমাবেশ প্রসঙ্গে যা বললেন রিজভী

বর্তমানে বিশ্বের নজর ইউক্রেন যুদ্ধের দিকে রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি খুবই কঠিন কারণ বিশ্বের মনোযোগ এখন ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং দেশটির উদ্বাস্তুদের দিকে।

এদিকে কাতার সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী বুধবার ঢাকার উদ্দেশে দোহা ত্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি-১২৬) স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

বিমানটি বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরন করবে। এর আগে ৪ মার্চ এলডিসি বিষয়ক ৫তম জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী দোহা পৌঁছান।

ট্যাগঃ

এ বিভাগের আরও

সর্বশেষ