রমজান মাসে বাজারে অস্থিরতা কমাতে পেঁয়াজ, ছোলা, ব্রয়লার মুরগি, গরুর মাংসসহ ২৯টি নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দেয় সরকার। তবে সেই বেঁধে দেওয়া দামের কোনো প্রভাব পড়েনি বাজারে। ফলে ক্রেতারাও হতাশ।
শনিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল, কৃষি মার্কেট ও কাওরানবাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
এর আগে শুক্রবার (১৫ মার্চ) ২৯টি নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া হলেও তা নিশ্চিত করতে সরকারের কোনো সংস্থার তদারকি চোখে পড়েনি বাজারগুলোতে। ফলে আগের চড়া মূল্যেই পণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বাজারে নতুন দামে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ার কথা ছিল ৬০ টাকা। তবে এখনও তা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। একইভাবে কেজিপ্রতি ফুলকপি ২৯ টাকা ৬০ পয়সা, বাঁধাকপি ২৮ টাকা ৩০ পয়সা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, বেগুন ৪৯ টাকায় বিক্রি করার কথা থাকলেও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা আর বেগুন ৬০-৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। এছাড়াও ৯৮ টাকার ছোলা কেজিপ্রতি ১২০ টাকা, ২৮ টাকা ৫০ পয়সার আলু প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ১৩০ টাকার মসুর ডাল ১৪০ টাকা, রসুন ১২০ টাকার বদলে ১৫০ টাকা এবং ১৮০ টাকা কেজি আদার মূল্য দেখা যায় ২০০ টাকা করে বিক্রি করতে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম সমন্বয়ে ২-৩ দিন সময় দিতে হবে। যে মূল্যে এই নিত্যপণ্য কেনা হয়েছে তা বেঁধে দেওয়া মূল্যে বিক্রি সম্ভব নয়। ব্যবসায়ীরা কম মূল্যে কিনতে পারলে বাজারের খুচরা মূল্যেও এর প্রভাব পড়বে। এখন পর্যন্ত সরকারনির্ধারিত দামের কোনো নির্দেশনা পাননি বলেও জানান তারা।
এক ক্রেতা বলেন, সরকারের আলু, পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম নির্দিষ্ট করে দেওয়াটা খবরেই দেখা যায়। বাজারের চিত্রের সঙ্গে সেটার কোনো মিল নেই। আগেও যে দাম ছিল, এখনও তা-ই আছে। এদিকে ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৬২ টাকা কেজি দাম নির্ধারণ করা হলেও আগের দামে ২২০ টাকায় ব্রয়লার এবং ৩৫০ টাকা কেজি দরে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে বাজারে। গরুর মাংসও আগের মূল্য ৭৫০-৭৮০ টাকা কেজি দরেই বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতাদের যুক্তি, সরকারের দেওয়া ৬৬৪ টাকা কেজি দামে বিক্রি করতে হলে মাথা, কলিজা, সব এক করে বিক্রি করতে হবে। ক্রেতাদের মনমতো মাংস কখনও এই মূল্যে পাওয়া সম্ভব নয়। মাছের বাজারের চিত্রও ভিন্ন নয়। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে কাতলা মাছ। তবে পাঙ্গাস মাছের ক্ষেত্রে সরকারনির্ধারিত দামের থেকেও ২০ টাকা কমে বিক্রি করতে দেখা যায়।
সেইসঙ্গে সরকার নির্ধারিত মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা করে।
বাজারে প্রতি কেজি জিহাদী খেজুর ১৫৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে এর কেজি ৩৫০ টাকার বেশি হওয়াতে, ব্যবসায়ীরা এই খেজুর দোকানেই তুলছেন না। এছাড়া সাগর কলার হালি খুচরায় ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা করে।