সিলেট সাব-রেজিস্ট্রার থাকাকালীন ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির মামলায় হাটহাজারীর সাব-রেজিস্ট্রার পারভিন আক্তারকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করলে বিচারক এ কিউ এম নাসির উদ্দিন তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
দুদকের আইনজীবী লুৎফুর কিবরিয়া শামীম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২০২০ সালে দুদক পারভিন আক্তারের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির এ মামলা করেন।
এদিকে হাটহাজারীর সাব-রেজিস্ট্রার পারভিন আক্তার কারাগারে থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন হাটহাজারী ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের সেবা গ্রহীতারা।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, পারভিন আক্তার সিলেট সাব-রেজিস্ট্রার থাকাকালীন ২০২০ সালে সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রার এলাকাধীন একটি কোম্পানির নামে থাকা ১৫ একর জমির শ্রেণী পরিবর্তন করেন তিনি। একই সাথে ব্যক্তি মালিকানা ও টিলা শ্রেণী দেখিয়ে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ১২টি দলিল রেজিস্ট্রেশনও করে দেন তিনি। এ ঘটনায় সরকার ১ কোটি ২৬ লাখ ৩৯ হাজার ২২৯ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।
পরে এ ঘটনায় ওই কোম্পানির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনজারুল আলম চৌধুরী ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি ২২ জনকে আসামি করে সিলেট মহানগর বিশেষ জজ আদালতে মামলা করেন। মামলায় দলিলদাতাকে প্রধান ও সাব-রেজিস্ট্রার পারভিন আক্তারকে ২ নম্বর আসামি করে ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।
মামলার পর আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্তের পর দুদকের সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলায় ৩ জন আসামি আদালত থেকে জামিন নিলেও পারভিনসহ বাকি ১৮ জন আসামি পলাতক ছিলেন। এদিকে পরোয়ানা থাকা সত্বেও সিলেট আদালতে আত্মসমর্পণ না করে নিয়মিত সাব-রেজিস্ট্রার পদে অফিস করছিলেন পারভিন আক্তার। গত সোমবার পর্যন্ত তিনি হাটহাজারীতে অফিস করেছেন বলে জানান হাটহাজারীর কয়েকজন দলিল লেখক।
অবশেষে গত ১৭ অক্টোবর বুধবার সাব-রেজিস্ট্রার পারভীন আক্তার সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে হাটহাজারী থানা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউজ্জামান ভয়েস অফ এশিয়াকে বলেন, বিভিন্ন খবরে দেখেছি। এ বিষয়ে আমি বেশি কিছু বলতে পারবোনা। এটা আমার এখতিয়ারাধীন বিষয় নয়। সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ যথাযত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
এ বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন হাটহাজারীর কয়েকজন দলিল লেখক। তারা বলেন, দুদকের মামলা কিংবা রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার বিষয়টি এতদিন আমাদের জানা ছিল না।