বর্তমান আ.লীগ সরকার টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থেকেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অত্যাচার ও নির্যাতনের একটি ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার করেনি’ বলে অভিযোগ করে গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।
তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনের ইশতেহারে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও সংখ্যালঘু প্রণয়নের কথা বললেও তারা তাদের কথা রাখেনি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে শুধুমাত্র ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করে।
শনিবার (১৮ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) হল রুমে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সুষ্ঠু গণনা ও ফলাফল ঘোষণা এবং নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি)।
দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
নুর বলেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু কিছু ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়। কিন্তু ওইসব ঘটনার কোনো সুষ্ঠু তদন্ত হয় না। ২০০১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেই ঘটনাগুলোর কমিশন হয়েছে, আরও তদন্ত হোক সেই ঘটনাগুলোর বিচার হোক এটা আমরা চাই।
তিনি আরও বলেন, গ্রাম-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায় খোঁজ নিলে দেখা যাবে, সব সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের উৎসবে দাওয়াতে আসে। কারণ তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক। গ্রাম-গঞ্জে কোনো বিভেদ নেই।
নুরুল হক নুর বলেন, আজ সনাতন পার্টি আওয়াজ তুলেছে। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি ভাবতে হবে। কারণ রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্যই এ ঘটনাগুলো ঘটনো হয়।
নুর তার আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এখন একটা সংকট তৈরি হয়েছে। আগামী নির্বাচন হবে কী হবে না!
নুর বলেন, সুপ্রিম কোর্টে কয়েকদিন আগে কি ঘটেছে? দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আইনজীবীদের পেটাতে পুলিশ গেছে। সেখানে প্রধান বিচারপতির অনুমতি ছাড়া সুপ্রিম কোর্টে পুলিশ ঢুকেছে। সিনিয়র আইনজীবী ও প্রবীণ নেতারা বলছেন, সামরিক শাসক আমলেও সুপ্রিম কোর্টে অনুমতি ছাড়া কেউ ঢুকেনি। কিন্তু কয়েকদিন আগে পুলিশ সেখানে গিয়ে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের মেরেছে ও পুলিশের কর্তা ব্যক্তিরা গিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। মানে গরু মেরে জুতা দান। এতেই বোঝা যায় আগামী নির্বাচন কী হবে।
সাংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টির (বিএসপি) সভাপতি আশীষ কুমার দাশ।
সভাপতির বক্তব্যে আশীষ কুমার দাশ বলেন, বাংলাদেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের অবস্থা এখন নলখাগড়ার মতো। সনাতনী সম্প্রদায়ের কোনো প্রকৃত রাজনৈতিক অভিভাবক না থাকায় তারা রাজনৈতিক বলির পাঁঠা হয়ে আসছে।
বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায় বলেন, আগামী দিনে বাংলাদেশ সনাতনী পার্টি (বিএসপি) বাংলাদেশের সনাতনী সম্প্রদায়ের প্রকৃত অভিভাবক হিসেবে রাজনৈতিক অধিকার আদায়ে সব ধরনের রাষ্ট্রীয় বৈষম্য নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করছে। ভবিষ্যতে কোনো রাজনৈতিক দল সনাতনী সম্প্রদায়কে যাতে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে তার জন্য বাংলাদেশ সনাতন পার্টি সনাতনী সম্প্রদায়কে সচেতন ও সজাগ করতে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে।
সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএসপির নির্বাহী সভাপতি অনুপ কুমার দত্ত, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট লিটন বনিক, অনিল পাল, প্রবীন হালদার, অ্যাডভোকেট বাসুদেব গুহ, ঝন্টু গোস্বামী, অ্যাডভোকেট কালিপদ সরকার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভেকেট সুমন কুমার রায়।