স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রবেশ করেছিল ১০ লাখের মতো। এখন সেই জনগোষ্ঠী সংখ্যায় বেড়ে ১৪ লাখ হয়েছে। তাদের কারণে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে।
সুইজারল্যান্ডের মন্ট্রিলে বিশ্ব স্বাস্থ্য আয়োজিত বিশ্বব্যাপী রোগীদের চিকিৎসা নিরাপত্তার ওপর পঞ্চম আন্তর্জাতিক মন্ত্রীপর্যায়ের সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা বলেন। ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ সম্মেলন হয়।
সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলিয়ান বারসেট বিশ্বের ৮০টি দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের সম্মেলনটির উদ্বোধন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে সম্মেলনের শেষ দিবসের আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে জাপান, সৌদি আরব, ইতালি, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হাঙ্গেরি, শ্রীলঙ্কা, ইরাক, কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে, মোজাম্বিক, লিবিয়া, নামিবিয়া, পর্তুগাল, আরব আমিরাতসহ ৮০টি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সম্মেলনে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ১০ লাখ থেকে বেড়ে ১৪ লাখ রোহিঙ্গা এখন দেশে। তাদের কারণে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বনাঞ্চল ধ্বংস হচ্ছে। আর এত বড় রোহিঙ্গা শিবিরের স্বাস্থ্যসেবা দেয়া দুরূহ কাজ।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা দিন দিন স্থানীয় লোকজনের প্রতি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে, যা সামলাতে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে সুইজারল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশের সহযোগিতা একান্ত জরুরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য খাতের নেতাদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র ও অসহায়। দরিদ্র দেশগুলো নানা রকম খাদ্য সমস্যায় ভোগার পাশাপাশি মানসম্মত চিকিৎসাসেবা পায় না। উন্নত দেশগুলোর উচিত দরিদ্র দেশগুলোর স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে আরও বেশি ও কার্যকর ভূমিকা রাখা। তাদের মানসম্মত চিকিৎসাসেবা দিতে উন্নত দেশগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। দরিদ্র দেশগুলোয় হাসপাতালের অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নত যন্ত্রপাতি কেনা ও প্রশিক্ষণ সেবা বাড়াতেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
বিভিন্ন দেশের হাসপাতালে রোগীদের সেবা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল, জবাবদিহিপূর্ণ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা, সচেতনতা বৃদ্ধি করা, তথ্যের আদান-প্রদান করার বিষয়ে বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সম্মেলনে অংশ নেয়া নেতারা কোভিড-১৯-এর করণীয় পরবর্তী বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন এবং ২০২১ থেকে ২০৩০ সাল ভিত্তিক অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।