চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য’র মেয়ে রিফাত মোস্তফা টিনার বিরুদ্ধে আড়াই লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনায় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) সাবেক সহযোগী অধ্যাপক মো. আসহাব উদ্দিন খালেদকে শোকজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
নোটিশে তার অবসরকালীন ভাতা স্থগিত করে তার বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানাতে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানা যায়।
নোটিশে বলা হয়, আপনি দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড কলেজ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আই.ই.আর এ শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে আপনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগী শিক্ষক। আপনার অবস্থান থেকে দেশের স্বনামধন্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও খ্যাতি ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোনো কাজ বা আচরণ করার অধিকার রাখেন না।
আপনি একটি পত্রে মিসেস রিফাত মোস্তফা টিনা প্রযত্নে প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার, মাননীয় উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পৃক্ত করে যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং এর আগেও পত্র দিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা’ সম্পূর্ণ রূপে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এর দ্বারা উপাচার্য মহোদয় তথা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেজ ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। আপনার হীনস্বার্থে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে আপনি এ রূপ পত্র প্রদান করেছেন মর্মে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করে।
সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ ছাড়া উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভিত্তিহীন এ বক্তব্য উপস্থাপন করার জন্য আপনার মাসিক পেনশন স্থগিতসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংবিধি (দক্ষতা ও শৃংখলা) ও দেশের প্রচলিত আইনে আপনার বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এ পত্র প্রাপ্তির ০৭(সাত) কর্ম দিবসের মধ্যে প্রমাণাদিসহ ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য আদেশক্রমে আপনাকে অনুরোধ করা হলো।
এ বিষয়ে সাবেক সহযোগী অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন খালেদ বলেন, আমি তো উপাচার্যের মেয়ের কাছে টাকা পাব। তিনি আমার কাছ থেকে ‘প্রীতিলতা’ নামক একটা চলচ্চিত্র বানানোর কথা বলে টাকা ধার নিয়েছে। যেটা আমাকে ড. উদিতি দাস শুনিয়েছেন। উদিতি আমার কাছে ফোন দেয় লাউড স্পিকারে পাশে থাকা উপাচার্য বলছেন, শুনছি যে আসহাব সাহেবকে বল যে কিছু টাকা ধার দিতে। আর আমি যে টাকা পাব এটা একশত ভাগ সত্য। আমি তো মিথ্যা কথা বলছি না।
তিনি আরও বলেন, চিঠি আমি উপাচার্যের মেয়েকে দিছি। এখানে রেজিস্ট্রারকে দিয়ে শোকজ করার কি আছে? এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পর্ক ছিল না। উপাচার্যের মেয়ে তো আমার কাছ থেকে চাঁদা নেয় নাই। সে তো আমার কাছ থেকে লোন নিছে। তাহলে সে কেন দিবে না? আমার এটা যাকাতের টাকা। সে না দিয়ে কোথায় যাবে?
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড শিরীণ আখতার কন্যা রিফাত মোস্তফা টিনার বিরুদ্ধে আড়াই লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। দুই দফা চিঠি দিয়েও পাওনা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী শিক্ষক শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) সাবেক সহযোগী অধ্যাপক মো. আসহাব উদ্দিন খালেদ।